এসটিএইচএন এর পরিচিতি

শুরুর কথা :
বসন্তের কোন এক মধ্যাহ্নে বন্ধুবর দুই যুবকের গল্পের বিষয় ছিল ‘পাহাড় এবং পাহাড়ি মানুষের জীবন ও বেঁচে থাকার লড়াইয়ের কথা’। হুযুগে মাতুয়ারা বাঙালি ঘর ছেড়ে ভ্রমণ প্রেমি হয়ে উঠেছি। তরুণরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পর্বতময় অঞ্চলগুলো। দীর্ঘ দিন সে দুয়ার বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের পার্বত্যাঞ্চলে যাতায়াত ছিল সীমিত। সে কপাট খুলে যেতেই শুরু হলো আমাদের অবাধ যাতায়াত। সাথে রাষ্ট্র কর্তৃক উন্নয়ন আর অগ্রগতির স্রোতধারা। পাল্টাতে থাকল চিরচেনা পাহাড়ের পরিবেশ ও প্রকৃতি। সংখ্যাগরিষ্ঠের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনও বাড়তে লাগলো। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলতে থাকে পরিবেশ ও প্রকৃতি বিনাশের কর্মকান্ড। এই চিত্র কেবল পাহাড়ে নয় সমতলেও। এভাবে তো আর চলতে দেয়া যায় না। কিছু একটা করা দরকার। এই ভাবনা থেকেই কিছু একটা করার তাড়নায় আমরা আশ্রই নেই সামাজিক যুগাযোগ মাধম্যের। তৈরি হয় একটি গ্রুপ- জন্ম হয় সেইভ দ্যা হিলস অ্যান্ড নেচারের। সময়ের সাথে সাথে সমমনা অনেকেই হন এর সারথি। পথ চলা শুরু করে এইচটিএন।

এসটিএইচএন এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

আমাদের প্রধান আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু পাহাড়। বলা হয় বৈচিত্রপূর্ণ জীবনাচার ও বর্ণিল লোকাচার কৃষ্টি-ঐতিহ্যের লীলাভূমি আমাদের পার্বত্য অঞ্চল। বাস্তবতা বলে বৈচিত্রতা আছে কিন্তু ঐতিহ্য ও প্রথাগত উৎসব, পোশাক, অলঙ্কার ও খাদ্যভাসে ব্যাপক পরিবর্তনের ছোঁয়াও লক্ষ্য করা যায়। বিশ্বায়নের যুগে কোন জাতি বা গোষ্ঠীকে বনসাই করে রাখা যায় না এবং সেই চেষ্টা করাও সঠিক নয়। তবে নিজস্ব কৃষ্টি-ঐতিহ্যগুলো ভুলে যাওয়াও উচিত হবে না। এর পরিণাম হবে ভয়াবহ। একথা সত্যি ক্ষুধার সাথে লড়াই করা মানুষের অন্যদিকে চিন্তা করার সুযোগ ও সময় কোনটাই থাকে না। 

তাই পাহাড়ের টেকসই উন্নয়ন হতে হবে পাহাড়বাসীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পাহাড়ের পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের সংরক্ষণ ইত্যাদিকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে। কেবলমাত্র অবকাঠামোগত উন্নয়ন যথেষ্ট নয়। আমাদের লক্ষ্য স্বল্পপরিসরে যতসামান্য যতটুকু পার্বত্য অঞ্চল আছে তার রক্ষা করার জন্য জনসচেতনতা গড়ে তোলা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী পার্বত্য অঞ্চলগুলো পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে আছে। জীববৈচিত্র প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই সেই সোনালি দিনগুলো। তাই প্রকল্প ভিত্তিক স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য আমরা কাজ করি।

এসটিএইচএন টিম

  • মির্জা রাসেল
    মির্জা রাসেলপ্রকৃতি মাতাকে ভালবেসেই কাটিয়ে দিতে চান পৃথিবীর প্রতিটি সকাল-সন্ধ্যা। একই সাথে নিভৃতচারী ও ভ্রমণপ্রেমী কিন্তু চেনা মানুষের সাথে আড্ডায় আসক্ত। স্বপ্ন দেখেন সমৃদ্ধ সবুজ পৃথিবীর। এসটিএইচএন এর প্রতিষ্ঠাতা।
  • ফেরদৌস রলিন
    ফেরদৌস রলিনলেখক ও কবি-এই দুই সত্তার বাহিরে…নিখাদ পরিব্রাজক। ঘুড়ে বেড়িয়েছেন দেশ-বিদেশের বহু জায়গা। সঙ্গীতে পারদর্শী মানুষটি পাহাড় ও প্রকৃতির সুরটিকেও আত্মস্থ করেছেন অসাধারণ নৈপুন্যে। বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তাঁর ভাবনার গন্ডি চিরচেনা জগতকেও ছাপিয়ে যায়। এসটিএইচএন এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা।
  • বুনো
    বুনোকখনও কখনও ব্যক্তিগত জীবনকেও ছাপিয়ে যায় ‘পাহাড়-ভাবনা’ - এমন করেই পাহাড়ের ভালবাসায় আবদ্ধ হয়েছেন। বন্ধুবৎসল ও কর্মচঞ্চল মানুষ। সবুজের সাথে সখ্যতা তাঁর আজন্মের। নগরের জীবনেও তাই নিজ গৃহে আছে সবুজের আয়োজন। এসটিএইচএন এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

পৃথিবীর শতকরা ২২ ভাগ জায়গা পর্বতময়। যেখানে বাস করেন মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৩ ভাগ মানুষ আর তারচেয়েও বড় কথা হচ্ছে সমতলবাসীদের জীবনের সাথেও পাহাড়/পর্বত অতপ্রোতভাবে যুক্ত।
মানুষের জীবনে ধর্মের প্রভাব ব্যাপক। কারণ, এর সঙ্গে মিশে থাকে বিশ্বাস ও উত্তরাধিকারের শিকড়। বর্তমান পৃথিবীর প্রধান চারটি ধর্ম ও ধর্ম প্রচারকদের প্রায় সকলের জীবনে পাহাড়/পর্বত বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। সরল ভাবে বলা যায়, এটি মানুষের সাংস্কৃতিক ক্রমবিকাশে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে। বেঁচে থাকার জন্য, বিনোদনের জন্য, ধর্মীয় উপাসনা, আচার-অনুষ্ঠানসহ নানাবিধ সামাজিক ও সাংস্কৃতি চর্চার প্ল্যাটফর্ম পর্বত।

আমাদের যাত্রায় আপনি সঙ্গী হচ্ছেন তো?

বাংলাদেশের যে কেউ আমাদের সদস্য হতে পারবেন। সদস্য হলেই আপনাকে সিলভার সদস্য হিসেবে গণ্য করা হবে। আপনার কাজের উপর নির্ভর করে আপনি হতে পারবেন গোল্ডেন সদস্য এবং এরই ধারাবাহিকতায় প্লাটিনাম সদস্য। প্লাটিনাম সদস্যবৃন্দ এইচটিএন-এর কর্মপ্রন্থা ও দাপ্তরিক সকল কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকবেন।

error: Website is protected !!